রোগের চাপ
এডোলেসেন্ট ইডিওপ্যাথিক স্কোলিওসিস AISAdolescent idiopathic scoliosis (AIS) হলো এমন একটি অবস্থা যার বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাব ০.৩৫% থেকে ১৩% পর্যন্ত, যেটি জাতিগত, লিঙ্গ এবং স্ক্রীনিং পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে, যা সাধারণত পুরুষ থেকে মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। থাইল্যান্ডে, কিছু স্কুলে জরিপ চালিয়ে দেখা যায় যে এর ব্যাপকতা ০.৯১% থেকে ৪.৬২% পর্যন্ত এবং ব্যাংকক শহরের স্কুলগুলোর ১৮১৮ জন ১১ থেকে ১৩ বছরেরছাত্রীর মধ্যে ৪.৬২% জনের মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। যদি চিকিৎসা করা না হয়, এই অবস্তায় মেরুদণ্ড আরো বেঁকে যেতে পারে, তীব্র পিঠের ব্যথা এবং মেরুদণ্ডের অবক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যা সৌন্দর্য, সামাজিক ও মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং গুরুতর ক্ষেত্রে ফুসফুসে কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে। তীব্র বাঁকপ্রবণতা এবং সার্জিক্যাল হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করার জন্য প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাকৃতিক ইতিহাস
এডোলেসেন্ট ইডিওপ্যাথিক স্কোলিওসিস এর প্রকৃত কারণ এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি, কিন্তু যেসব কারণে এমনটা হতে পারে বলে মনে হয় তা নিন্মলিখিত:
১) জেনেটিক্স: গবেষণায় দেখা গেছে জেনেটিক প্রবণতার কারণে একই পরিবারের মেয়েদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশী, ১১% ক্ষেত্রে নিকট আত্মীয়দের মধ্যে এটা বেশী হয়এবং নিকট আত্মীয় না হলে এটার সম্ভাবনা কম হয়। গবেষণায় দেখা যায় অভিন্ন যমজ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে স্কোলইসিসের প্রবণতা বেশী হয় যা আনুমানিক ৭৫% সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। হেটেরোজয়গস যমজদের জন্য যা ৩৩% সম্ভাবনা।
২) কানেক্টিভ টিস্যুর অস্বাভাবিকতা: স্কোলিওসিস এবং কানেক্টিভ টিস্যুর অস্বাভাবিকতা যেমন মারফান সিনড্রোমের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে।
৩) থ্রম্বোসাইট অস্বাভাবিকতা: থ্রম্বোসাইট অস্বাভাবিকতা (রক্তের প্লেটলেট) এবং প্রোটিন ইন্ট্রাসেলুলার ক্যালসিয়াম বাইন্ডিং (কালমডিউলিন) এবং মেলাননিন হরমোন স্কোলিওসিস রোগের একটা কারণ হিসাবে কাজ করে।
৪) গ্রোথ এবং বায়োমেকানিক্যাল তত্ত্ব: দ্রুত বৃদ্ধির সময়কালকে বাঁকা হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে দেখা হয়, এবং এই বৃদ্ধি বন্ধ হয় হাড়ের পরিপক্কতার পর। তবে, এই বিষয়গুলি এখনও গবেষনার পর্যায় । বায়োমেকানিক্সের ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে মেরুদণ্ডের বাকের সংকীর্ণ দিকের কার্টিলেজ অতিরিক্ত ওজন বহন করছে যা বৃদ্ধি বন্ধ করে দিতে পারে, যাতে মনে করা হয় অস্বাভাবিক লোডের ফলস্বরূপ মেরুদণ্ডের অঙ্গসজ্জা ও অঙ্গবিকৃতি সৃষ্টি করতে পারে।
এসব উপসর্গের কারণে শারীরিক বিভিন্ন ব্যবস্থাকে প্রভাবিতকারী উপসর্গগুলি নিম্নরূপ:
১) ব্যাক পেইন আইওয়া (IOWA) দীর্ঘমেয়াদী সিরিজ একটি ৫০ বছরের গবেষণা ছিল যা দেখিয়েছে যে স্কোলিওসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মেরুদণ্ডের পরিপক্কতা লাভ করার পরও পিঠের ব্যথা অনুভব করতে পারে। এই গবেষণার এক্সরে ফলাফলে দেখা যায় ৯১% রুগী মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষতি করে, দুইটি হাড়ের মাঝখানে দূরত্ব কমিয়ে বা বাড়িয়ে দেয়, ফাসেট জয়েন্টের ক্ষতিসাধন করে, অস্টিওফাইটের সামান্য ক্ষতিসাধন করে থাকে। যদিও, সমস্ত ধরণের পিঠের ব্যথা মেরুদণ্ডের হাড়ের দূরুত্ব কমে যাবার কারণে হয়না এটা হয় মেরুদণ্ডের হাড়ের নির্দিষ্ট অবস্থানের স্থান যদি পরিবর্তিত হয়। এই কারণে৩০ বছর ধরে সুইডেন এর গবেষণায় দেখা যায় আনুমানিক ৯০% স্কোলিওসিস রুগী কোমরের নিচের দিকেও ব্যথা অনুভব করে থাকেন, যা কিছু বিশ্রাম নিলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আরাম বোধ করেন, যদিও তা কতুটুকু বেঁকে গেছে এবং মেরুদণ্ডের কোথায় বেঁকে গেছে তার উপর নির্ভর করেনা।
২) ফুসফুসের কার্যক্ষমতা, এটা অনেক অংশে নির্ভর করে মেরুদন্ড কতটুকু বেঁকে গেছে তার উপর, যদি মেরুদন্ড ৬০-৭০% বেঁকে যায় তাহলে ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে, যেটা প্রতি সেকেন্ডে শ্বাস নেয়া এবং ছাড়ার ক্ষমতা ২০% কমতে শুরু যখন মেরুদন্ড ১০০ ডিগ্রী বেঁকে যায় যা (FVC) এবং (FEV1) নামে পরিচিত। উইনস্টাইন আরো লক্ষ্য করেন যাদের মেরুদন্ড ১০০-১২০ ডিগ্রী বেঁকে যায় তাদের ক্ষেত্রে FVC আরো উল্লেখযোগ্য হারে কার্যকারিতা কমিয়ে ফেলে বিশেষ করে থোৱারিক হিপোক্যাপসিস নামে পরিচিত।
৩) মৃত্যুঝুঁকি; যেসব রুগীর থোরাসিক ১০০ ডিগ্রী বেঁকে গেছে তাদের ফুসফুস এবং হৃৎপিণ্ডের জটিলতার কারণে মৃত্যুঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়।
৪) মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: স্কোলিওসিস একটি গুরুতর কসমেটিক অঙ্গবিকৃতি সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে গুরুতর বাঁকগুলির ক্ষেত্রে যেখানে রিবের উত্থান ৩ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে। তবে, মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবের তীব্রতার সাথে অবস্থান বা আকারের মধ্যে কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
৫) গর্ভাবস্থা: নাচেমসনের গবেষণায় দেখা যায় যে ২৩ বছরের মধ্যে একাধিকবার গর্ভধারণ করলে, বেঁকে যাওয়ার বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বেটজ এড আল. রিপোর্ট অনুযায়ী য, প্রথম গর্ভাবস্থার শুরু, গর্ভাবস্থার সংখ্যা, বা বাঁক স্থিতিশীলতা স্কোলিওসিসের বাঁক বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায় না, যখন আইওয়া (IOWA) দীর্ঘমেয়াদী গবেষণায় দেখা গেছে যে মৃদু-মধ্যম স্কোলিওসিস গর্ভাবস্থা বা সন্তান প্রসবের ফলাফলকে প্রভাবিত করেনি।
প্রবন্ধ লেখক: ডা. প্রিতসনাই প্রুত্তিকুল
অর্থোপেডিক্স ও মেরুদণ্ডের সার্জারিতে বিশেষজ্ঞ
আরো বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন
For more information please contact:
- বামরুনগ্রাদ অর্থোপেডিক সেন্টার
সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা (ব্যাংকক সময়)
ফোন: +৬৬২০১১৩০৯২
রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা (ব্যাংকক সময়)
কন্টাক্ট সেন্টার +৬৬২০৬৬৮৮৮৮ এবং ১৩৭৮
Last modify: ноември 06, 2024